মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ১১:০৪ পূর্বাহ্ন

৩ বছরের মধ্যেই দেশে চলবে বৈদ্যুতিক গাড়ি!

৩ বছরের মধ্যেই দেশে চলবে বৈদ্যুতিক গাড়ি!

স্বদেশ ডেস্ক:

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে বৈদ্যুতিক (ইলেকট্রিক) গাড়ির ব্যাপক প্রচলন করতে চায় সরকার। সড়কে যাতে বৈদ্যুতিক গাড়ি চলতে পারে কিংবা প্রয়োজনে চার্জ নিতে পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ ছাড়া বিদ্যুতের ব্যবহার ও চার্জিংয়ের জন্য আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে একটি নীতিমালা তৈরির কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর একাধিক কর্মকর্তা মনে করেন, বাংলাদেশে পুরোদমে ইলেকট্রিক গাড়ি চালুর ক্ষেত্রে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো- এ খাতে বিনিয়োগের অভাব রয়েছে। এখনো গড়ে ওঠেনি পাবলিক চার্জিং স্টেশন, নেই সঠিক নীতিমালা কিংবা বৈদ্যুতিক গাড়ির সুনির্দিষ্ট মডেল।

বৈদ্যুতিক গাড়ি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হিসেবে পরিচিত। বিশে^র অনেক দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ি পুরোদমে চালু হয়েছে। ধারণা করা হয়, আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে অধিকাংশ গাড়িই হবে বিদ্যুৎচালিত। প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল, শ্রীলংকায়ও বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রচলন শুরু হয় বেশ কয়েক বছর আগেই। এ ধরনের গাড়ি পরিবেশবান্ধব; জ্বালানি খরচও তুলনামূলক কম।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের সব বিভাগীয় শহরে বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং স্টেশন স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, ‘বাংলাদেশেও কিন্তু বৈদ্যুতিক গাড়ি চলে। ইজিবাইক, মিশুক, বা অটো বৈদ্যুতিক চার্জিংয়ের মাধ্যমে চলছে। সরকার এখন নির্দিষ্ট মডেলের টেকসই বৈদ্যুতিক গাড়ি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।’

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এখানে মূল কাজ হলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালায়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ও বিআরটি কর্তৃপক্ষের। বিদ্যুৎ বিভাগ শুধু বৈদ্যুতিক চার্জিংয়ের সুবিধাটা নিশ্চিত করবে।’

বিদ্যুৎ বিভাগের আরেক কর্মকর্তা বলেন, দেশে অবৈধ বৈদ্যুতিক গাড়ি বাড়তে থাকায় দুই বছর আগে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে একটি নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিদ্যুৎচালিত গাড়ি আমদানি ও চলাচল নিয়ে তৈরি ওই নীতিমালার খসড়ায় বলা হয়, রিচার্জেবল ব্যাটারিতে সঞ্চিত বিদ্যুৎশক্তির সাহায্যে চালিত মোটরযানই ইলেকট্রিক মোটরযান (বা বিদ্যুৎচালিত গাড়ি)। এর ব্যাটারি বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন বা নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে রিচার্জ করা হয়। খসড়ায় বিদ্যুৎচালিত মোটরসাইকেলের জীবনকাল ১০ বছর, তিন চাকার যান ৯ বছর এবং হালকা, মধ্যম ও ভারী যানের জন্য ২০ বছর ধরা হয়েছে।

সম্প্রতি সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বৈদ্যুতিক গাড়ি চালু করা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। সেখানে সংসদীয় কমিটির প্রায় সবাই অবিলম্বে দেশের সর্বত্র বৈদ্যুতিক গাড়ি চালুর বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেন।

সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে গেলে বৈদ্যুতিক গাড়িতে যেতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘কী ধরনের গাড়ি সড়কে চলবে, সেটা নির্ধারণ করবে বিআরটিএ। বিদ্যুৎ বিভাগের কাজ হলো একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা। নীতিমালা হলেই বাণিজ্যিকভাবে চার্জিং স্টেশনের জন্য লাইসেন্স ইস্যু করা হবে, যাতে করে সবাই বৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারের মাধ্যমে গাড়ি চার্জ করতে পারেন। চার্জিং স্টেশন পর্যাপ্ত হলে ইডি যানবাহনও দ্রুত বাড়বে।’

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা প্রায় ২৫ হাজার মেগাওয়াট। যার মধ্যে গড়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা সুবিধা কাজে লাগিয়ে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ানো গেলে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে, অন্যদিকে বিদ্যুতের বাড়তি উৎপাদন সক্ষমতাও কাজে লাগানো যাবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877